‘কীভাবে মারা গেলাম বুঝতে পারছি না’ - FeniOnline24 - Feni First Online Radio Station

FeniOnline24 - Feni First Online Radio Station

FeniOnline24 a live online Radio station from feni.

Feni Online 24 Radio Station

News Update

Feni online 24 radio station

রবিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২১

‘কীভাবে মারা গেলাম বুঝতে পারছি না’

পঞ্চগড় বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের চেংমাড়ী কুমারপাড়া এলাকার বাসিন্দা আজিম উদ্দিন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী বয়স ৯৯ বছর। শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ হলেও এখনো হাঁটা-চলা করতে পারেন। সম্প্রতি তার বয়স্ক ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাংক, সমাজসেবা অফিস এবং উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, তিনি বেঁচে নেই। কাগজে-কলমে তিনি মৃত। তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বয়স্ক ভাতা।

বেঁচে থেকেও নিজের মৃত্যুর খবর শোনায় অবাক আজিম উদ্দীন। বিস্মিত তার স্বজনসহ এলাকার মানুষও। একদিকে ভাতা বন্ধ অন্যদিকে জীবিত থেকেও নির্বাচন কমিশনের সার্ভারের তালিকায় তিনি মৃত। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে ঘুরেও কোনো কাজ হয়নি। পরে তিনি নির্বাচন কমিশনে তার মৃতের তথ্যটি সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন। তাকে মৃত দেখিয়ে ভাতা বন্ধ হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন আজিম উদ্দীন।

আজিম উদ্দীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি নাকি মৃত, তাই ওরা ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে। মৃত্যুর আগেই কীভাবে মারা গেলাম বুঝতে পারছি না। আমার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটবে ভাবিনি। যারা এমনটি করেছে আমি তাদের বিচার দাবি করছি।’

শুধু আজিম উদ্দীন নয়, পঞ্চগড়ের পাঁচ উপজেলার প্রায় অর্ধশত মানুষের একই অবস্থা। এখনো তারা জীবিত রয়েছেন। নিয়মিত কাজকর্মও করছেন। কেউ বার্ধক্যজনিত কারণে ঘর থেকে বের হতে পারেন না। নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে তাদেরকে দেখানো হয়েছে মৃত হিসেবে। তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের নাম।

সম্প্রতি সমাজসেবা অধিদপ্তরে সামাজিক ভাতাভোগীদের ডাটাবেজ তৈরির জন্য এমআইএস ডাটা এন্ট্রির সময় একের পর এক এমন ঘটনা বেরিয়ে আসতে থাকে। জীবিতদের মৃত্যুর খবরে ভুক্তভোগীরাসহ অবাক স্থানীয়রাও।

এ ছাড়া সার্ভারে মৃত দেখানোয় ব্যক্তিরা পড়েছেন দুর্ভোগে। বৃদ্ধ বয়সে ভোগ করে আসা ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো সংশোধন করতেও নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

পঞ্চগড়ের পাঁচ উপজেলার ৩০ জন ভুক্তভোগী মৃতের তালিকা থেকে তাদের নাম আবারও সার্ভারে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন। তার মধ্যে পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ১২ জন, বোদা উপজেলায় ১৩ জন, আটোয়ারী উপজেলায় একজন ও তেঁতুলিয়া উপজেলায় চারজন রয়েছেন। এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদেরকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের ভুক্তভোগী মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমাদের ইউপি সদস্য জাকারিয়া আমার কাছ থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ডটি নিয়ে বলে, আপনার নাম কাটা গেছে। আপনি মৃত। কথাটা শুনে আমার মাথা ঘুরে গেছে। জীবিত মানুষটাকে মৃত বানালো কে তাকে একটু দেখতে চাই। কারা এমন কাজ করলো তদন্ত করে বের করা হোক। ’

ওই এলাকার মোহাম্মদ আলী নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি যদি মৃতই হই তাহলে কি আবার আমি বয়স্ক ভাতা দাবি করি? এমনিই চলাফেরা করতে পারি না তার উপর নতুন করে এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ রানা বলেন, ‘আমাদের গ্রামের চার ব্যক্তিকে নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে মৃত দেখানো হয়েছে। জীবিত থেকেও তারা সার্ভারে মৃত। তাই তাদের বয়স্ক ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছেন তারা। আমরা চাই দ্রুত নির্বাচন কমিশন তাদের এই ভুল সংশোধন করবে এবং যারা এই খামখেয়ালিপনা কাজ করেছে তাদের বিচার করবে।’

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায় বলেন, ‘পঞ্চগড় জেলায় মোট ভাতাভোগী ৬৬ হাজার ৭৮৫ জন। এসব ভাতাভোগীদের এমআইএস-এ ডাটা এন্ট্রি করা হচ্ছে। এ সময় কিছু ভাতাভোগীদের তথ্য এন্ট্রি করা যাচ্ছে না। কারণ কারো ভোটার তালিকায় তথ্য গরমিল রয়েছে। জন্মসনদ ও ভোটার তালিকায় দুই রকম তথ্য রয়েছে। আবার কাউকে মৃত দেখানো হয়েছে। যাদের মৃত দেখানো হয়েছে তাদের নির্বাচন কমিশনের সার্ভাসে তথ্য সংশোধন করা হলেই ভাতা দেওয়া যাবে।’

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের সময় ভুলক্রমে এমনটি হয়ে থাকতে পারে। তবে আমরা যাদের আবেদন পাচ্ছি দ্রুত সেটি সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দিচ্ছি। আশা করি শিগগিরই বিষয়টি সংশোধন হয়ে যাবে। এ ছাড়া এই ভুলের জন্য কারা দায়ী সেটিও আমরা তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

"Fenionline 24" radio station keep update bangla songs every day. Thanks for Visit our "feni online" 24 radio station website.