সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী আহমেদ উল্লাহ গত ২৫ অক্টোবর দেশে ছুটিতে গিয়েছিলেন। আবুধাবি ফিরতে সরকারি অনুমতির প্রয়োজন হলে অপেক্ষার সময় বাড়ে তার। সর্বশেষ অনলাইনে আবেদন করে ‘সবুজ সংকেত’ মিলে আহমেদ উল্লাহর। দেশটিতে একটি প্রতিষ্ঠানের পার্টনার হিসেবে কর্মরত তিনি। আমিরাত ফেরার অনুমতি পেয়ে চড়া মূল্যে টিকিট কিনেছেন বাংলাদেশ বিমানের। ১৭ এপ্রিল আবুধাবির উদ্দেশে উড়ে যাবার কথা ছিল তার। কিন্তু তা আর হচ্ছে না এখন।
একই দেশে দুই মাসের ভ্রমণে যাবার কথা মুন্নি বড়ুয়ার। ১৪ এপ্রিলের জন্য এয়ার অ্যারাবিয়ার ফ্লাইট বুকিং দিয়েছেন স্বামী সোহেল বড়ুয়া। দুই মাসের ভ্রমণ শেষে ১৪ জুলাই পুনারায় দেশে ফেরার টিকিটও নিশ্চিত করা ছিল তার। এখন আমিরাত যাওয়াই তার অনিশ্চিত হয়ে গেল।
আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট বন্ধ করায় তাদের মতো এমন হাজার হাজার প্রবাসীর স্ব স্ব কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। টিকিটের মূল্য কিংবা হোটেল বুকিংয়ের টাকা ফেরত নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। এরচেয়েও বড় ভয়ের আশঙ্কায় থাকা প্রবাসীরা সমকালকে জানান, ওই সব দেশে তাদের ভিসা, আকামার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবার কথা। যথা সময়ে ফিরতে না পারলে এগুলো নবায়ন করাও সম্ভব হবে না। এমনকি হয়ত তারা আর ফিরেও যেতে পারবেন না সেসব দেশে।
তার মতো কাতার প্রবাসী চট্টগ্রামের বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ ছুটিতে দেশে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন। পাঁচ মাসের ছুটির স্থলে কেটে গেছে তার ১৭ মাস। এরমধ্যে শেষ হয়ে গেছে কাতার কর্মস্থলের আইডির মেয়াদ। গত মার্চে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুনরায় কাতার ফিরে যাওয়ার বন্দোবস্ত শুরু করেন তিনি।
৮০ হাজার টাকা খরচ করে নতুন করে টিকিট করেছেন। প্রায় ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করে কাতার গিয়ে কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য একটি হোটেলেও বুকিং দিয়েছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে ১৮ এপ্রিল করোনাভাইরাস পরীক্ষার নমুনা দিয়ে ২১ এপ্রিল ইউএস বাংলার ফ্লাইট ধরে চট্টগ্রাম ছেড়ে যাবার কথা ছিল তার। কিন্তু এরমধ্যেই দেশে করোনার প্রকোপ বাড়ায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট। এতে করে দেশে ১৭ মাস আটকে থাকা ফয়েজ আহমেদের যাত্রা পুনরায় অনিশ্চয়তার বেড়াজালে আটকে গেছে।
কাতার প্রবাসী চট্টগ্রামের ফয়েজ আহমেদ সমকালকে বলেন, সোমবার সকাল থেকে ইউএস বাংলার চট্টগ্রাম অফিসে এসে অপেক্ষা করছি। যেতে পারব কি-না তারা সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারছে না। করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়েছি, তারাও ফিরিয়ে দিয়েছে। ফ্লাইট চালুর ঘোষণা এলে তবেই করোনা পরীক্ষা করাবে তারা। এতদিনের অপেক্ষা, তার ওপর এতগুলো টাকা খরচ করেও যেতে না পারলে পথে বসতে হবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী আহমেদ উল্লাহ বলেন, অনেকদিন ধরে সবুজ সংকেতের জন্য অপেক্ষা করে আছি। যাও সংকেত এসেছে, এখন টিকিট করেও ফেরা অনিশ্চিত হয়ে গেল। দেশে ফিরেছি ছয় মাস হয়ে যাচ্ছে, সময় মতো না যেতে পারলে আর আমিরাত ঢুকতে পারব কি-না বুঝে উঠতে পারছি না।
মুন্নি বড়ুয়ার স্বামী সোহেল বড়ুয়া জানান, ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা পেয়ে এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার। তবে সঠিক কোনো নির্দেশনা দিতে পারেনি তারা।
প্রবাসীরা বলছেন, চলমান করোনা মহামারির শুরু থেকে বহির্বিশ্বের বেশকিছু দেশ আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে দেশে আটকে পড়া প্রবাসীরা চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে যান। অনেকের শেষ হয়ে যায় ভিসা ও আকামার মেয়াদ। কিছু কিছু দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পর্যায়ে এলে আকাশপথের যোগাযোগ শুরু হয়। পুনারায় আশায় বুক বাঁধা শুরু করেন আটকে পড়া প্রবাসীরা। নিয়োগকর্তা বা নিয়োগ দেওয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে প্রবাসে ফেরার অনুমতি নিতে শুরু করেন তারা। কিন্তু এবার দেশ থেকে সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়ায় আবারও ভুক্তভোগী প্রবাসীদের অনিশ্চয়তা বেড়ে গেছে। বিমান টিকিট কিনে, হোটেল বুকিং দিয়েও বিদেশে ফিরে যাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা শঙ্কা। অনেক প্রবাসীর দাবি, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায় চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তাদের।
Feni online 24 radio station
সোমবার, ১২ এপ্রিল, ২০২১
দেশ থেকে সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়ায় আবারও ভুক্তভোগী প্রবাসীদের অনিশ্চয়তা
"Fenionline 24" radio station keep update bangla songs every day. Thanks for Visit our "feni online" 24 radio station website.